রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি পোশাক কারখানা ও শাহআলমের রাসায়নিক (কেমিক্যাল) গুদামে আগুন লাগে। এ ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কারখানায় আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবক কর্মীরা। কেমিক্যাল গুদামে আগুন লাগার স্থান থেকে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে তারা ভবনটি ঘিরে রেখেছেন। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, তিনতলা পোশাক কারখানায় এখনো তারা তল্লাশি চালাচ্ছে অবশ্য রাসায়নিক কেমিওথেরাপি গুদামের আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।সেখানে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক, হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছেন উৎসুক জনতা ও নিখোঁজদের স্বজনরা। চারপাশে কান্না আর উৎকণ্ঠার ছাপ। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবনটি ঘিরে রেখেছেন। কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিকেল ৫টার দিকে নতুন করে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স ভবনের ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়। তখন স্বজনদের মধ্যে নতুন করে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। তাদের ধারণা, ভেতরে হয়ত আরও মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
নিহতের সংখ্যা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৯ জনের মরদেহ পেয়েছি। ধারণা করছি, কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের সময় যে বিস্ফোরণ হয়, সেখান থেকে নিঃসৃত বিষাক্ত গ্যাসেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভবনটি এখনো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভেতরে আগুন জ্বলছে। কেমিক্যাল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান স্থগিত রয়েছে। আমরা সবাইকে বলব, অন্তত ৩০০ গজ দূরে নিরাপদে থাকুন। ভেতরে এখনো কেউ থাকলে কেমিক্যাল নিষ্ক্রিয় করার পর সার্চিং শুরু করা হবে।কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের উৎস সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তারা জানায়, উদ্ধার কাজ শেষ হয়নি। তবে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
স্থানিয়রা জানান, আগুন প্রথমে লাগে কারখানার নিচতলায় ‘ওয়াশ সেকশনে পরে সেখান থেকে পাশের টিনের ছাউনির শাহ আলমের রাসায়ানিক গুদামে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তখন গুদামে একটি বিস্ফোরণ হয়। এতে গুদামের রাসায়নিকের ড্রামগুলো ছিটকে পড়ে। তখনই আগুন আরও বেড়ে যায় এবং পুরো কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার কিছু কর্মী বের হতে পারলেও বেশির অনেকেই ভেতরে আটকা পড়েন বলে জানান তারা। এ রিপোর্ট প্রকাশের আগ মুহুর্ত মিরপুরের রূপনগরের গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন কেউ কেউ। স্বজনরা দিশেহারা হয়ে ছুটছেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, হাসপাতল ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছে। কেউ হারিয়েছেন ছেলে, কেউ ভাই, কেউ ভাগনি আবার কেউ হারিয়াছেন মেয়ে।
Leave a Reply